কেন ডিজিটাল মার্কেটিং আপনার ব্যবসার বৃদ্ধির চাবিকাঠি
ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমান সময়ে তরুণদের ইনকাম করার অন্যতম উৎস। বর্তমানে অধিকাংশ নারী-পুরুষ ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে তাদের ব্যবসা উন্নতি করছে। তাই আমাদের আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন ডিজিটাল মার্কেটিং কি,ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন, ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ কি, ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শুরু করব, ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধাগুলো কি কি, কেন ডিজিটাল মার্কেটিং আপনার ব্যবসার বৃদ্ধির চাবিকাঠি সম্পর্কে।
আমরা আজ এই আর্টিকেল আলোচনা করব কেন ডিজিটাল মার্কেটিং আপনার ব্যবসার বৃদ্ধির চাবিকাঠি
ডিজিটাল মার্কেটিং কি
ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমান সময়ে অনলাইন মার্কেটের অন্যতম উৎস। ডিজিটাল মার্কেটিং হল একটি পণ্যকে ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কাস্টমারের কাছে পৌঁছে দেয়া বা পণ্যটি সম্পর্কে কাস্টমারের কাছে সঠিক তথ্য প্রদান করা।এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমেই ব্যবসা অনলাইন মার্কেটে অধিক পরিসরে বৃদ্ধি করা যায় । কারণ এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে একটি পণ্য সহজেই কাস্টমারের কাছে পৌঁছে যায়। যার কারণে তারা নিজের পছন্দমত পণ্য অনলাইন থেকে কিনতে পারে।
ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন
অনেকের মনেই একটি প্রশ্ন থাকে যে কেন ডিজিটাল মার্কেটিং করব। ডিজিটাল মার্কেটিং করার অনেকগুলো ভালো দিক রয়েছে। কারণ বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষ ইন্টারনেট দুনিয়ায় থাকে। আর এ সময়ে সহজেই মানুষের কাছে কোন পণ্যের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা যায়।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে দেশ-বিদেশে যেকোনো জায়গায় পণ্যের বিবরণ পৌঁছানো যায় । যার ফলে দেশ-বিদেশে যে কোন জায়গা থেকেই সহজেই পণ্যটি সংগ্রহ করা যায়।
ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবসার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ। যে কোনো ব্যবসার জন্য বিজ্ঞাপন বা প্রচারণার কাজে অনেক খরচ করতে হয়। তবে যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে এই বিজ্ঞাপন বা প্রচারণা দেওয়া হয়। তাহলে খরচ অনেকটা কমে যায়। যার ফলে ব্যবসায় সহজেই লাভ করা যায় ।
বর্তমানে ব্যবসা করে বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে গেলে কিছু ইউনিক আইডিয়া রাখতে হয়। আর এই ইউনিক আইডিয়া হল ডিজিটাল মার্কেটিং করা। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে সহজেই বিশ্ববাজারে টিকে থাকা যায় এবং ব্যবসাকে অধিক পরিসরে বিস্তৃত করা যায়।
এছাড়াও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ক্রেতাদের পছন্দ অপছন্দ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায়। কারণ বর্তমানে অধিকাংশ মানুষই অনলাইনে সময় কাটান। যার ফলে তাদের পছন্দ অপছন্দগুলো সহজেই অনলাইন এর মাধ্যমে জানা যায় এবং সেই অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করা যায়। তাই বর্তমান সময়ে ব্যবসার ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ কি
ব্যবসার ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ অনেকটা। কারণ এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমেই ব্যবসাকে অধিক মাত্রায় পরিসর করা সম্ভব এবং কাস্টমারের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করা সহজ।
ব্যবসার উন্নতির অন্যতম চাবিকাঠি হলো ব্রান্ড। আর এই ব্রান্ডের প্রচারণা ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে অধিক পরিসরে করা যায়। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব বা গুগলে ব্রান্ড সম্পর্কে মানুষের কাছে জানান দেয়।
ব্যবসায় গ্রাহক বা কাস্টমার বাড়াতে ডিজিটাল মার্কেটিং অন্যতম ভূমিকা পালন করে। কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে সহজেই বিভিন্ন ধরনের গ্রাহক বা কাস্টমার নির্ধারণ করা যায়।
গ্রাহক বা কাস্টমারদের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যতম একটি কাজ।
ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শুরু করব
ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে কয়েকটি ধাপ অবলম্বন করতে হয়। ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমান সময়ে অনলাইন কেনাকাটা প্ল্যাটফর্মের অন্যতম মাধ্যম। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে সব থেকে বেশি অনলাইন কেনাকাটা করা সম্ভব এবং সঠিক পণ্য গ্রাহক বা কাস্টমারের কাছে পৌঁছানো সম্ভব বা পণ্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য বা সচেতনতা গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব।
ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করার জন্য প্রথমে একটি মানসম্মতওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। যার মাধ্যমে আপনি অনলাইন ব্যবসার সকল তথ্য গ্রাহক বা কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে পারবেন এবং যার মাধ্যমে সহজে গ্রাহক বা কাস্টমার আপনার পণ্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাবে এবং পণ্যটি কিনতে করতে পারবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করার সময় যে ধরনের পণ্যের ব্যবসা করছেন সেই পণ্যের চাহিদা অনুযায়ী গ্রাহক বা কাস্টমার নির্ণয় করা খুবই জরুরী।
ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করার আগে অবশ্যই আপনাকে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। কারণ এটা ডিজিটাল মার্কেটিং এর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পার্ট। কারণ আপনি কোন লক্ষ্যে বা কোন ব্যবসার কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করতে চান সেটা আগে নির্ধারণ করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনাকে কনটেন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। যেটা সহজেই গ্রাহক বা কাস্টমার বুঝতে পারবে এবং সেই সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে এসিও(SEO) খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পার্ট ।এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসার পণ্য সম্পর্কে সঠিক কিওয়ার্ড রিসার্চ করে কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন। যার মাধ্যমে আপনি আপনার পণ্য সম্পর্কে সব তথ্য গ্রাহক বা কাস্টমারের কাছে সহজেই পৌঁছে দিতে পারবেন।
ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া যেমন-ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, মেসেঞ্জার ইত্যাদি ব্যবহার করা। কারণ অধিকাংশ মানুষ সব থেকে বেশি সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটায়। আর এর জন্য সহজেই পণ্যটি গ্রাহক বা কাস্টমারের কাছে পৌঁছানো যায়।
ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার ও কি কি
ব্যবসার উন্নতির জন্য বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং অন্যতম একটি অনলাইন মাধ্যম। এর মাধ্যমে সহজেই এবং কম সময়ে ব্যবসায় উন্নতি করা সম্ভব। তবে ধরন অনুসারে ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক প্রকার।নিচে ধরন অনুসারে ডিজিটাল মার্কেটিং এ বিভিন্ন প্রকার দেওয়া হলঃ
১.সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)
২.এসইও (SEO)
৩.সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM)
৪.কনটেন্ট মার্কেটিং (Content Marketing)
৫.পে-পার ক্লিক (PPC)
৬. ই-মেইল মার্কেটিং (Email Marketing)
৭.ইলেকট্রনিক বিলবোর্ড মার্কেটিং (Electronic Billboard Marketing)
৮.টেলিভিশন এডভার্টাইজিং (Television Advertising)
৯.টেলিভিশন এডভার্টাইজিং (Television Advertising)
১০.রেডিও মার্কেটিং (Radio Marketing)
১১.অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)
১২.মোবাইল এডভার্টাইজিং (Mobile Advertising)
১৩.অফলাইন মার্কেটিং(Online Marketing)
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধাগুলো কি কি
ব্যবসার ক্ষেত্রে অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি করার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধা অপরিসীম। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্যবসাকে অধিক পরিমাণে পরিসর করা যেতে পারে। তাই নিতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কয়েকটি সুবিধা তুলে ধরা হলোঃ
১.ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্যবসা কে অধিক পরিসরে বৃদ্ধি করা যায়। কারণ একমাত্র ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমেই ব্যবসার ব্র্যান্ডকে পুরো বিশ্ববাজারে পৌঁছে দেওয়া যায়।
২.ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমেই সঠিক গ্রাহক বা কাস্টমার নির্ণয় করা যায়। কারণ ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমেই গ্রাহক বা কাস্টমারের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।
৩.ব্যবসার ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং খুবই সাশ্রয়ী। কারণ কম খরচে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্যবসার ব্রান্ড বা পণ্য সম্পর্কে গ্রাহক বা কাস্টমারের কাছে তথ্য দেওয়া যায় এবং পণ্যটি গ্রাহক বা কাস্টমার কাছে সহজে সরবরাহ করা যায়।
৪.ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে ব্যবসার উন্নতি করা যায়। কারণ অধিকাংশ মানুষ বেশি সময় অনলাইন প্লাটফর্মে থাকে। আর এ সময় পণ্য সরবরাহ করা সহজ। তাই খুব কমের মাধ্যমেই ব্যবসার উন্নতি সম্ভব।
৫.বর্তমানে বিশ্ববাজারে ব্যবসায় একটি প্রতিযোগিতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ব্যবসায়ী টিকে থাকার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমেই প্রতিযোগিতামূলক মার্কেটে অন্যদের ব্যবসার গতিবিধি নির্ধারণ করা যায় এবং কৌশল সম্পর্কে জানা যায়। যার ফলে সেই অনুসারে নিজের ব্যবসাকেও অধিক পরিসরে বাড়ানো যায়।
৬.ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যতম সুবিধা হল সহজেই পণ্য সরবরাহ করা। কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমেই সহজেই পণ্য খুব কম সময়ের মধ্যেই সরবরাহ করা যায়।
৭.ব্যবসার উন্নতির জন্য সৃজনশীল ধারণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমেই সহজেই ব্যবসা সম্পর্কে সৃজনশীল ধারণা নেওয়া যেতে পারে। যার ফলে দ্রুতই ব্যবসার উন্নতি করা যেতে পারে।
কেন ডিজিটাল মার্কেটিং আপনার ব্যবসার বৃদ্ধির চাবিকাঠি
আমাদের উপরের পোস্টগুলো পড়লে আপনারা কেন ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবসার উন্নতির চাবিকাঠি সে সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন। কারণ ব্যবসার উন্নতির জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমান সময়ে খুবই জনপ্রিয় একটি অনলাইন প্লাটফর্ম।
ব্যবসার উন্নতির জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করলে সহজেই ব্যবসার উন্নতি করা যেতে পারে এবং বিশ্ববাজারে অধিক পরিসরে ব্যবসার ব্রান্ড বা পণ্যকে তুলে ধরা যেতে পারে। যার কারণে খুব কম সময়ে স্বল্প খরচেই পণ্যটি গ্রাহক বা কাস্টমারের কাছে সরবরাহ করা যেতে পারে এবং কাস্টমারের বা গ্রাহকদের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করা যেতে পারে।
সর্বোপরি ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমান সময়ে ব্যবসার উন্নতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ব্যবসার উন্নতির জন্য আমাদের সবারই ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা উচিত এবং সেই অনুসারে অনলাইনে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা উচিত। যার মাধ্যমে ব্যবসাকে আরো উন্নতি করা যেতে পারে। আজ কিভাবে এই ব্যবসাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে উন্নতি করা যেতে পারে সেই সম্পর্কে উপরে কিছু তথ্য দেওয়া হলো। আশা করি যেটা পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন।
Post a Comment
0Comments