লিপিড প্রোফাইল টেস্ট নরমাল রেঞ্জ
বর্তমান বাংলাদেশে প্রায় অধিকাংশ মানুষের শরীরে উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।এই উচ্চ কোলেস্টেরলের জন্য শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় ।শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নির্ণয় করার জন্য লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা হয়। তাই আমাদের আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন লিপিড প্রোফাইল টেস্ট কি, লিপিড প্রোফাইল টেস্ট কেন করা হয়, লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করার নিয়ম, লিপিড প্রোফাইল বেশি হলে কি হয়, লিপিড প্রোফাইল কমানোর উপায়, লিপিড প্রোফাইল টেস্ট নরমাল রেঞ্জ এবং লিপিড প্রোফাইল টেস্ট খরচ কত সম্পর্কে।
আমরা আজ এই আর্টিকেলে আলোচনা করব লিপিড প্রোফাইল টেস্ট নরমাল রেঞ্জ
লিপিড প্রোফাইল টেস্ট কি
লিপিড প্রোফাইল টেস্ট হলো রক্তের এমন একটি পরীক্ষা। যার মাধ্যমে শরীরে বিভিন্ন ধরনের কোলেস্টেরল এর পরিমাণ নির্ণয় করা হয়।
লিপিড প্রোফাইল টেস্ট কেন করা হয়
বিভিন্ন কারণে চিকিৎসাক লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
১.মূলত রক্তে চর্বির পরিমাণ নির্ণয় করার জন্য লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা হয়।
২.উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিলে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা হয়।
৩.অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা দিলে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা হয়।
৪.কিডনি জনিত সমস্যা দেখা দিলে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা হয়।
৫.হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক করলে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা হয়।
৬.হার্টের সমস্যা দেখা দিলে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা হয়।
৭.লিভারে সমস্যা দেখা দিলে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা হয়।
লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করার নিয়ম
লিপিড প্রোফাইল টেস্ট খালি পেটে বা ভরা পেটে যেকোনো সময় করা যায়। তবে সঠিক ফলাফল পাওয়ার জন্য চিকিৎসক ফাস্টিং লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করার পরামর্শ দেন। ফাস্টিং লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করার জন্য ৮ থেকে ১০ ঘন্টা খালি পেট থাকার পর লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করতে হয়। আর যদি চিকিৎসক শুধু লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করার পরামর্শ দেন। তাহলে যেকোনো সময় রক্ত দিয়ে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা যায়।
লিপিড প্রোফাইল বেশি হলে কি হয়
১.শরীরে লিপির প্রোফাইল এর পরিমাণ বেশি থাকলে হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২.শরীরে লিপিড প্রোফাইলের পরিমাণ বেশি থাকলে লিভারে সমস্যা দেখা দিতে পারে ।
৩.শরীরে লিপিড প্রোফাইলের পরিমাণ বেশি হলে স্ট্রোক বা হার্ট এটাকের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
৪.শরীরে প্রোফাইলে পরিমাণ বেশি হলে উচ্চ রক্তচাপ বা অনিন্দিত ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫.শরীরে অতিরিক্ত লিপিড প্রোফাইলের পরিমাণ বেড়ে গেলে কিডনিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
লিপিড প্রোফাইল কমানোর উপায়
কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললেই শরীরে লিপিড প্রোফাইল বা চর্বির পরিমাণ কমানো যায়।
১.নিয়মিত এক থেকে দুই ঘন্টা হাঁটলে শরীরে লিপিড প্রোফাইলের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
২.প্রতিদিন এক থেকে দুই ঘন্টা শারীরিক চর্চা বা ব্যায়াম করলে শরীরে লিপিড প্রোফাইলের পরিমাণ কমে যেতে বা কমানো যায়।
৩.চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকলে শরীরে লিপিড প্রোফাইলে পরিমাণ কমানো সম্ভব।
৪.অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা মদ্যপান করা থেকে বিরত থাকলে শরীরে লিপিড প্রোফাইলে পরিমাণ কমানো যায়।
৫.অতিরিক্ত কোল্ড ড্রিঙ্কস, ফাস্টফুড বা দুগ্ধ জাত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকলে লিপিড প্রোফাইলের পরিমাণ কমানো যায়।
৬.খাবার তালিকায় নিয়মিত শাকসবজি বা সামুদ্রিক মাছ থাকলে শরীরে লিপিড প্রোফাইলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৭.প্রতিদিন সকালে খালি পেটে গ্রিন টি পান করলে শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
লিপিড প্রোফাইল টেস্ট নরমাল রেঞ্জ
লিপিড প্রোফাইল টেস্ট প্যানেলের মধ্যে মোট চারটি টেস্ট করা হয়। নিচে এই টেস্ট গুলোর নরমাল রেঞ্জ দেওয়া হলোঃ
- Total Cholesterol: 150-200 mg/dl
- Triglycerides: <150 mg/dl
- HDL(High Density Lipoprotein): 35-65 mg/dl
- LDL(Low Density Lipoprotein): <150 mg/dl
লিপিড প্রোফাইল টেস্ট খরচ কত
লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করতে যেকোনো সরকারি হাসপাতালে ২৫০ -৫০০ টাকা এবং যে কোন বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং হাসপাতালে ১৩০০ -১৫০০ টাকার মতো খরচ হতে পারে।
সর্বোপরি রক্তে কোলেস্টেরল বা চর্বি পরিমাণ বেশি থাকলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা উচিত । লিপিড প্রোফাইল টেস্ট সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে সেই মোতাবেক জীবন যাপন করা উচিত।তাই আমাদের আজকের এই পোস্টটি পড়লে আপনারা লিপিড প্রোফাইল টেস্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
Post a Comment
0Comments