টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর নাম

Pathology Knowledge
By -
0

টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর নাম 


টাইফয়েড জ্বর বর্তমানে মানুষের ভিতরে একটি সাধারণ জ্বর হয়ে দাঁড়িয়েছে।  ছোট থেকে বড় কমবেশি প্রায় সবাই এই টাইফয়েড জ্বরের আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেরই এই টাইফয়েড জ্বর সম্পর্কে ধারণা খুবই কম। তাই আমাদের আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন টাইফয়েড জ্বর কি, টাইফয়েড জ্বর কেন হয়,টাইফয়েড জ্বর হলে কি গোসল করা যায়, টাইফয়েড জ্বর হলে কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাবো, টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায়, টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত, টাইফয়েড টেস্ট খরচ কত বাংলাদেশ এবং টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর নাম  সম্পর্কে।


টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর নাম


আমরা আজ এই আর্টিকেলে আলোচনা করব টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর নাম 


টাইফয়েড জ্বর কি


টাইফয়েড জ্বর(Typhoid fever) একটা পানি বাহিত রোগ। এটি সালমানিলা টাইপি (Salmonella typhi) বা সালমনিলা প্যারাটাইফি (Salmonella paratyphi) ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে সৃষ্টি হয়।



টাইফয়েড জ্বর কেন হয়


যেহেতু টাইফয়েড জ্বর পানি বাহিত রোগ তাই টাইফয়েড জ্বর সবথেকে বেশি  দূষিত পানির মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। এছাড়াও দূষিত খাবার গ্রহণ বা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব বা কোন সংক্রমিত ব্যক্তির মল বা মূত্র দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে।



টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ


১.জ্বর ১০৪ ডিগ্রি বা তার বেশি হওয়া।


২.শরীরের সব সময় জ্বর থাকা।


৩.অতিরিক্ত মাথা ব্যথা করা।


৪.শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া।


৫.ক্ষুধা কমে যাওয়া।


৬.সমস্ত শরীর ব্যথা হওয়া।


৭.বমি হাওয়া বা বমি বমি ভাব হওয়া।


৮.জ্বর এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হওয়া।


৯.ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেওয়া।


উপরোক্ত লক্ষণ গুলি দেখা দিলে বুঝতে হবে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।



টাইফয়েড জ্বর হলে কি গোসল করা যায়


হ্যাঁ, টাইফয়েড জ্বর হলে গোসল করা যাবে। হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলে জ্বর কমার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও টাইফয়েড জ্বরের সময় মাথায় জলপট্টি দিলে আরাম পাওয়া যায়।



টাইফয়েড জ্বর হলে কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাবো


টাইফয়েড যাওয়ার ফলে একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানো উত্তম।



টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায়


১.টাইফয়েড জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।


২.বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।


৩.তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।


৪.পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করতে হবে।


৫.বাইরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।


৬.বাথরুমে জুতা ব্যবহার করতে হবে এবং টয়লেট টিস্যু ব্যবহার করতে হবে।


৭.খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে।


৮.যে কোন খাবার ভালোভাবে ধুয়ে বা ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে।



টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত


১.টাইফয়েড জ্বর হলে শরীরে পানি শূন্যতা সমস্যা দেখা দিতে পারে । তাই এ সময় প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।এছাড়া ও ডাবের পানি, ফলের জুস, বিভিন্ন ধরনের সুপ ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।


২.টাইফয়েড জ্বর হলে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যেমন- সেদ্ধ আলু, ভাত খাওয়ানো যেতে পারে।এছাড়াও কিসমিস বা  শুকনো আঙ্গুর খাওয়ানো যেতে পারে। এটা শরীরে শক্তি যোগাবে এবং টাইফয়েড জ্বরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।


৩.টাইফয়েড জ্বর হলে দুগ্ধ জাতীয় খাবার যেমন- দুধের তৈরি যে কোন খাবার ঘি, মাখন, দই, মিষ্টি ইত্যাদি খাওয়ানো যেতে পারে। এটা শরীরে শক্তি যোগাবে।


৪.টাইফয়েড জ্বর হলে খেজুর খাওয়া যেতে পারে। এতে শরীরের দুর্বলতা কাটতে সাহায্য করবে।



টাইফয়েড টেস্ট খরচ কত বাংলাদেশ


টাইফয়েড টেস্ট করতে যেকোনো সরকারি হাসপাতালে ১৫০ - 300 টাকার মতো খরচ হতে পারে এবং যেকোনো বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং হাসপাতালে ৫০০ -১৫০০ টাকার মত খরচ হতে পারে।



টাইফয়েড জ্বরের ইনজেকশন এর নাম 


টাইফয়েড জ্বর হলে প্রথম পর্যায়ে চিকিৎসা কিছু এন্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়ে থাকেন।


এজিথ্রোমাইসিনঃএজিথ্রোমাইসিন এন্টিবায়োটিক ওষুধ চিকিৎসক টাইফয়েড জ্বরের প্রথম পর্যায়ে পাঁচ থেকে সাত দিনের ডোজ দিয়ে থাকেন।


এছাড়াও টাইফয়েড জ্বর এন্টিবায়োটিক ওষুধ ঠিক হলে চিকিৎসা পরবর্তীতে কিছু ইনজেকশন দেয়ার পরামর্শ দেন।


টাইপিম ভি (Typim V): টাইফয়েড জ্বর হলে চিকিৎসাক টাইপিম ভি ইনজেকশনটি দেওয়ার পরামর্শ দেন। কারণ এই ইনজেকশনটি টাইফয়েড জ্বরের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এবং টাইফয়েড জ্বর সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

ভ্যাক্সফয়েড (Vaxfoyed): টাইফয়েড জ্বর হলে চিকিৎসাক ভ্যাক্সফয়েড  ইনজেকশনটি দেওয়ার ও পরামর্শ দেন। এটি টাইফয়েড জ্বরের প্রতিশোধক হিসেবে কাজ করে।

সেফট্রিয়াক্সোন (Ceftriaxone): এছাড়াও টাইপের জ্বর হলে চিকিৎসক সেফট্রিয়াক্সোন 1 gm বা 2 gm ইনজেকশন দেওয়ার পরামর্শ দেন । এটি এই ইনজেকশনটি ব্যাকেরার বিরুদ্ধে লড়াই করে।



সর্বোপরি টাইফয়েড জ্বর শরীরের জন্য খুবই মারাত্মক একটি জ্বর । এই জ্বরের সময়মতো চিকিৎসা না হলে শরীরের যে কোন অংশ মারাত্মক আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই আমাদের সবসময় সতর্ক থাকতে হবে।

Tags:

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)